পরিবেশ ছাড়পত্র কেন ও কিভাবে নিতে হয় ?

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
অবস্থানগত ও পরিবেশগত ছাড়পত্রের কেন নিতে হয় ও কিভাবে নিতে হয় , নবায়নের শর্ত কি এবং ফি কত ও পরিবেশ সার্টিফিকেটের শ্রেনী কি কি?

পরিবেশ ছাড়পত্র কেন প্রয়োজন?

এখন একটি ফ্যাক্টরি করা হবে। প্রথমে ফ্যাক্টরিতে কী উৎপাদন হবে, সেটা ঠিক করতে হবে। তারপর সে ফ্যাক্টরিতে কী পরিমাণ পানি ব্যবহার করবে, গ্যাস ব্যবহার করবে, বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে এ বিষয়গুলোর একটি পরিমাণ উল্লেখ করে তালিকা করতে হবে। পুরো ফ্যাক্টরিটি স্থাপন করার ফলে ওই অঞ্চলে পরিবেশের কী ধরনের পরিবর্তন হতে পারে তা এনালাইসিস করতে হবে। ধরুন ফ্যাক্টরিটি হলে ৩০টি গাছকাটা লাগতে পারে। আবার যারা কোনো শিল্পকারখানা করবে, তাদের অভ্যন্তরে ২৫ শতাংশ উদ্ভিদ থাকতে হয়। সব কিছু সঠিকভাবে হচ্ছে কি-না, সে বিষয়য়টি যাচাইয়ের জন্য ইআইএ (এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট) করে যদি দেখা যায়, এখানে কোনো শিল্পকারখানা করলে যারা বসবাস করছে তারা, প্রকৃতি অথবা রাষ্ট্রীয় স¤পদ এর তেমন ক্ষতি হবে না, তবেই শুধু পরিবেশ ছাড়পত্র অনুমোদন দেওয়া হয়!

এ কাজটি পরিবেশ অধিদপ্তর করে থাকে। যতই দিন যাচ্ছে ততই আমাদের দূষণ বাড়ছে। এই দূষণ কমিয়ে আনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সঠিক চিন্তা এবং বিজ্ঞানভিত্তিক একটি পর্যালোচনা। কোনো কিছু তৈরির আগে তার পুরো বিশ্লেষণ থাকলেই শুধু একটি টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন সম্ভব।

উপরোক্ত লিখাটির লেখক পরিচিতি – সাঈদ চৌধুরী , সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি ও রসায়নবিদ ,শ্রীপুর, গাজীপুর , E-Mail: aschowdhury88@afsana-pervin

.

পরিবেশ ছাড়পত্রের বাধ্যবাধকতা কোন আইনে বলা হয়েছে ?

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ আইনের ধারা ১২ এর সংশোধনী বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ এর ০৬ নং বলা হয়েছে ;

(০১) মহা-পরিচালকের নিকট হইতে বিধি দ্বারা পদ্ধদিতে, পরিবেশগত ছাড়পত্র ব্যাতীরকে কোন এলাকায় কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা প্রকল্প গ্রহন করা যাইবে না ।

২) এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে স্থাপিত শিল্প প্রতিষ্ঠান বা গৃহীত প্রকল্পের ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ কার্যকরের পর অবিলম্বে পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ করিতে হইবে।

(৩) কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্প সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বিধি ধারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ করিতে হইবে।

(8) পরিবেশত ছাড়পর বিষয়ে প্রণীত বিধিমালতে অন্যান্য বিষয়ে সহিত পরিবেশগত প্রভাব নিরুপণ প্রতিবেদন,পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পন প্রনয়ন, জনমত যাচাই, এই সকল বিষয়ে জনগণের তথ্য প্রাপ্রতা, ছাড়পত্র প্রদনকারী কমিটির গঠন ও কর্মপদ্ধতি, ছাড়পত্রের নূন্যতম আবশ্যয়কীয় শর্তাবলী , আপীল ইতাদি বিষয়ে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকিবে।

(৫) অধিদপ্তর পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদানের জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের তালিকা প্রতি জছর ৩১ শে মার্চ তারিখের মধ্যে পূর্ববর্তী বৎসরের তালিকা হালনাগাদ করিবে এবং বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপন প্রতিবেদন বা পরিবেশগত ব্যাবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি বা সংস্থার নূন্যতম যোগ্যতা ও দায়িত্ব নির্ধারন করিবে ও এই সংক্রান্ত তালিকা প্রস্তুত , অনুমোদন এবং হালনাগাদ করিবে।

.

পরিবেশ ছাড়পত্র কয়টি শ্রেনীতে বিভক্ত?

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ এর ধারা ০৭ অনুযায়ী

৭। পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদানের পদ্ধতি।- (১) পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদানের উদ্দেশ্যে পরিবেশের উপর প্রভাব বিস্তার এবং অবস্থান অনুযায়ী শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পসমূহ নিম্নে বর্ণিত চারটি শ্রেণীতে বিষক্ত হইবে, যথাঃ

ক) সবুজ

খ) কমলা-ক

গ) কমলা-খ এবং

ঘ) লাল

(২) উপ-বিধি (১) এ বর্ণিত শ্রেণীসমূহের অন্তর্ভূক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পসমূহের বিবরণ তফসিল-১ এ প্রদত্ত

হইয়াছে।

(৩) সকল শ্রেণীর বিদ্যমান শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কর এবং সহজ শ্রেণীরও প্রস্তাবিত শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের ক্ষেত্রে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হইবে।

(8) কমলা-ক, কমলা-ব এবং লাল শ্রেণীভূক্ত প্রস্তাবিত শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের ক্ষেত্রে সর্ব প্রথম অবস্থানগত এবং তৎপর পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হইবে; তবে শর্ত থাকে যে, কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পের আবেদনক্রমে এবং মহাপরিচালক যদি উপযুক্ত মনে করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পকে অবস্থানগত ছাড়পত্র প্রদান ব্যতিরেকে সরাসরি পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করিতে পারিবেন

  • (৪ক) উপ-বিধি (৪) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সরকারি/বেসরকারি) ও বিসিক। শিল্প নগরীতে স্থাপিত শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের ক্ষেত্রে অবস্থানগত ছাড়পত্রের প্রয়োজন হইবে না।

(৫) পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পের উদ্দ্যোক্তা তফসিল ১৩ তে বর্ণিত যথাযথ ফি।সহ ফরম-৩ এ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তার নিকট আবেদন করিবেন

(৬) উপ-বিধি (৫ )- এ উল্লেখিত আবেদনপত্রের সহিত নিম্নবর্ণিত কাগজপত্র সংযুক্ত করিতে হইবে।

.

কিভাবে অনলাইনে পরিবেশ ছাড়পত্র করার জন্য আবেদন করা যায় ?

১. অনলাইনে পরিবেশ ছাড়পত্র করতে প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে এই লিংকে। অনলাইন পরিবেশ ছাড়পত্র আবেদন ফরম

২. এই লিংকে গিয়ে প্রথমেই আপনাকে রেজিস্টারে ক্লিক করে নতুন একাউন্ট করার পর আপনার ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে।

৩. এর পর অনলাইন আবেদন ফরমের সকল তথ্য প্রদান করতে হবে।

৪. এখানে আপনি ফরম ১-৪ পর্যন্ত মোট ৪ টি ফরম পাবেন। এই ফরমগুলো পুরন হয়ে গেলে আপনার মোবাইল এবং ইমেইলে আপনার পরিবেশ ছাড়পত্রের আবেদন সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে মর্মে মেসেজ পাবেন।

৫. এর পর পুরনকৃত ফরম এবং চালানের রশিদটি প্রিন্ট করে নির্ধারিত পরিমান অর্থ সোনালী ব্যাংকে জমা প্রদানের মাধ্যমে আপনার আবেদন পক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।

.

পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য প্রয়ােজনীয় কাগজপত্রসমূহ

Website : পরিবেশ অধিদপ্তর

০১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন।

০২। শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন (কেবল প্রস্তাবিত শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)।

০৩। প্রাথমিক পরিবেশগত সমীক্ষা (আইইই) প্রতিবেদন (প্রতি প্রকল্পের ক্ষেত্রে) অথবা পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (ইএমপি) প্রতিবেদন।

০৪। উৎপন্ন দ্রব্যের প্রসেস ফ্লো ভায়াগ্রাম (Pollution Points উলেখপূর্বক)।

০৫। ক. শিল্প প্রতিষ্ঠান/প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যান (ৰজ্য পরিশোধনগারের অবস্থান নির্দেশিত)।

       খ. শিল্প প্রতিষ্ঠান/ প্রকল্পের ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা।

০৬। বর্জ্য পরিশোধনগার (ইটিপি) এর নকশা (লে প্রশজুৰিত শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) অথবা পরিশোধনগার (ইটিপি) এর নকশাসহ উহার কার্যকারিতা সম্পর্কিত তথ্যাদি ।

০৭। স্থানীয়  কর্তৃপক্ষের অনাপত্তিপত্র (ওয়ার্ড কমিশনার / চেয়ারম্যান)।

০৮। পরিবেশগত বিরূপ প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত জরুরী পরিকল্পনাসহ দূষণের প্রলেপ হ্রাসকরণ পরিকল্পনা।

০৯। পুনঃস্থাপন, পূনর্বাসন, পরিকল্পনার রূপরেখা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।

১০। লোকেশন ম্যাপ (চৌহদ্দি এবং উলেখযোগ্য স্থাপনা, কারখানা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও তাৰ লে-আউট প্ল্যান এর তথ্যাদি দূরত্বসহ অবস্থান)।

১১। ট্রেড লাইসেন্স।

১২। হালনাগাদ আয়করের পরিশোধের  প্রত্যয়নপত্র (টাকার পরিমানসহ টি, ভ্যাট সার্টিফিকেট)।

১৩। দাগ, খতিয়ান উল্লেখ পূর্বক পূর্ণাঙ্গ মৌজা ম্যাপ (দাগ নম্বর চিহ্নিতকরণসহ)।

১৪। জায়গার মালিকানা দলিল (মিউটেশন পর্চা)/ভাক্তার চুক্তিপত্র)।

১৫। বিনিয়োগ বোর্ড / বিসিক এর নিবন্ধনপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।

১৬ । ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।

১৭। কারখানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তারিখ উল্লেখ পূর্বক বিনিয়োগ বোর্ড /ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি কর্তৃক প্রদেয় প্রত্যয়নপত্র।

পরিবেশ ছাড়পত্রের ফি

Get 30% off your first purchase

X
error: Content is protected !!