এসি জেনারেটর কি , কত প্রকার , সুবিধা ?

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সংজ্ঞাঃ যে যন্ত্রে বা মেশিনের সাহায্যে যান্ত্রিক শক্তিকে এসি বিদ্যুত শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়, তাকে এসি জেনারেটর বলে। এসি জেনারেটরকে অল্টারনেটর বা সিনক্রোনাস জেনারেটরও বলা হয়। জেনারেটরকে ইঞ্জিন, টারবাইন অথবা অন্য কোনো উপায়ে প্রাপ্ত যান্ত্রিক শক্তির সাহায্যে ঘুরানো হলে তাতে বিদ্যুত শক্তি উৎপন্ন হয়। যে যন্ত্র বা মেশিনের সাহায্যে এসি জেনারেটরের শ্যাফটকে ঘুরানো হয়, তাকে প্রাইম মুভার বলে। প্রাইম মুভার হিসাবে যে কোনো ইঞ্জিন, বিভিন্ন প্রকার টারবাইন এবং মোটর ইত্যাদি ব্যাবহার করা হয়।

মৌলিক এসি জেনারেটরের কার্যপদ্ধতি বাস্তবক্ষেত্রে এসি জেনাটেরে আর্মেচার স্থির থাকে এবং এর ফিল্ডকে ঘুরানো হয়। এর কার্যপদ্ধতি সহজে বোঝাবার জন্য একটি মৌলিক এসি (এক প্যাঁচ বিশিষ্ট) জেনারেটরের গঠন দেখানো হল-

এসি জেনারেটর

দুটি স্থির পোল উত্তর ও দক্ষিণ-এর মাঝখারে একটি মাত্র কয়েল কখগঘ বিশিষ্ট আর্মেচার ঘুরছে। কয়েলের দুটি প্রান্ত দুটি স্লিপ রিং-এর সাথে সংযোগ করা আছে। এখানে উল্লেখ্য যে স্লিপ রিং দুটি ইনসুলেটিরের সাহায্যে একটি আপরটি হতে সম্পূর্ণ আলাদা থাকে, যাতে একটির সাথে অপরটির কোনো ধাতব সংযোগ না হয়। স্লিপ রিং দুটির উপর কার্বন ব্রাশ বসিয়ে তাদের মাধ্যমে লোডে সাপ্লাই নেওয়া হয়। এখানে লোড হিসাবে একটি রেজিস্ট্যান্স AB দেখানো হয়েছে। মনে করি, এক কয়েল বিশিষ্ট আর্মেচারটি প্রথমে এমন অবস্থানে আছে যে, এর দুটি কন্ডাক্টর পোল দুটির মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান করছে, কথ উপরে এবং গঘ নিচে। এই অবস্থান হতে আর্মেচারটি ডানাবর্তে ঘুরতে আরম্ভ করলে তার কখ কন্ডাক্টরে কারেন্টের দিক ‘ক’ হতে ‘খ’ এবং গঘ কন্ডাক্টরে কারেন্টের দিক ‘গ’ হতে ‘ঘ’ এর দিকে হয়। ফলে সমস্ত কয়েলে কারেন্টের দিক ‘গঘকখ’ এবং লোডে কারেন্টের দিক A হতে B এর দিকে হবে। অর্ধ ঘূর্ণন পরে ‘কখ’ কন্ডাক্টর নিচে এবং ‘গঘ’ কন্ডাক্টর উপরে অবস্থান করবে। ফলে কখ কন্ডক্টরে কারেন্টের দিক হবে ‘খ’ থেকে ‘ক’ এর দিকে এবং ‘গঘ’ কন্ডাক্টরে করেন্টের দিক হবে ‘ঘ’ থেকে ‘গ’ এ দিকে। অর্থাৎ সমস্ত কয়েলে কারেন্টের দিক হবে ‘খকঘগ’ এবং লোডে কারেন্টের দিক হবে B থেকে A এর দিকে। সুতরাং জেনারেটরটিতে যে ভোল্টেজ উৎপন্ন হয় তার করেন্টের দিক অর্ধ ঘূর্ণন পরপর বিপরীতমুখী হয় এবং এর ফলে লোডের মধ্য দিয়েও কারেন্ট প্রবাহের দিক নির্দিষ্ট সময় পরপর বিপরীতমুখী হয়। সুতরাং এটা এসি উৎপন্ন করে। জেনারেটরের একটি কয়েল সাইড যে বৃত্তাকার পথে ঘুরছে তাকে সমান আট অংশে ভাগ করে প্রত্যেক অবস্থানের তাৎক্ষণিক ভোল্টেজের লেখচিত্র অঙ্কন করলে তা খ নং চিত্রের অনুরূপ হবে। কন্ডাক্টর সাইডটি যখন ১নং অবস্থানে তখন তাতে ভোল্টেজ শূন্য। কারণ এই অবস্থায় কন্ডাক্টর ফ্লাক্সের সমান্তরাল থাকে বলে এটা কোনো ফ্লাক্স কর্তন করে না। সামনে অগ্রসর হতে থাকলে ফ্লাক্স কর্তন করতে থাকে এবং এই কর্তনের হার আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। ফলে উৎপাদিত ভোল্টেজও বাড়ে। এই ভোল্টেজ ২নং অবস্থানে কিছু বেশি এবং ৩নং অবস্থানে সবচেয়ে বেশি হয়। এর পর ভোল্টেজ কমতে থাকে এবং ৪নং অবস্থানে আরও কম এবং ৫নং অবস্থানে আবার শূন্য হয়। ৫নং অবস্থানের পর আবার কমতে থাকে এবং ১নং অবস্থানে অবার শূন্য হয়। সুতরাং এই উৎপন্ন ভোল্টেজ এসি। এসি জেনারেটরের বিভিন্ন অংশের নামঃ বাস্তবক্ষেত্রে এসি জেনারেটরের ফিল্ড ঘুরে এবং আর্মেচার স্থির থাকে।

এসি জেনারেটরের প্রধান অংশ দুটি। যথা- (১) স্টেটর বা স্থির অংশ (২) রোটর বা ঘুরন্ত অংশ

স্টেটর বা স্থির অংশঃ এসি জেনারেটরের যে অংশ স্থির থাকে তাকে স্টেটর বা স্থির অংশ বলে। স্টেটর নিম্নলিখিত অংশগুলো নিয়ে গঠিত-

ক. ইয়োক বা ফ্রেম

খ. অ্যান্ডশিল্ড বা সাইড কভার

গ. আর্মেচার

ঘ. আর্মেচার ওয়াইন্ডিং

ঙ. বিয়ারিং

চ. ব্রাশ গিয়ার

রোটর ঘুরন্ত অংশঃ এসি জেনারেটরের যে অংশ ঘুরে তাকে রোটর বলে।

নিম্নলিখিত অংশগুলো নিয়ে রোটর গঠিত-

ক. ফিল্ড

খ. রোটর শ্যাফট

গ. স্লিপ রিং।

তথ্যসুত্র: weecircuit.com

এসি জেনারেটর কত প্রকার ?

এসি জেনারেটর দুই প্রকার

১। ইন্ডাকশন জেনারেটরঃ ইন্ডাকশন জেনারেটর সাধারন জেনারেটর এর মতই অল্টারনেটিং কারেন্ট জেনারেটর এবং সাধারন জেনারেটর এর মত একই কার্যপ্রনালীতে কাজ করে। এই জেনারেটর এর কার্যপ্রনালী ট্রান্সফর্মারের মতই শুধু পার্থক্য হল ট্রান্সফরমার একটি স্ট্যাটিক ডিভাইস এবং জেনারেটর একটি ঘুর্নায়মান ডিভাইস। এগুল সাধারনত ছোট মেশিন যেমন মিক্সার এ ব্যাবহার হয়।
২। সিঙ্ক্রোনাস জেনারেটরঃ এই জেনারেটর হচ্ছে অল্টারনেটিং কারেন্ট জেনারেটর যেটা সিঙ্ক্রোনাস স্পিডে ঘুরে। এগুলো পাওয়ার প্লান্টে ব্যবহার করে হয় এদের উচ্চতর দক্ষতার কারনে। সিঙ্ক্রোনাস জেনারেটর ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশনের ফ্যারাডের সুত্র অনুসারে কাজ করে।

সুবিধা

  • সাধারন ডিজাইন
  • ছোট সাইজের হয়
  • লস খুব কম হয়
  • কম মেইন্টেন্যান্স এর প্রয়োজন হয়।
  • ব্রেকার এর সাইজ তুলানামুলক ছোট হয়।

অসুবিধা বা লস

এসি জেনারেটর এর অসুবিধা বা লসগুলো নিম্মরূপঃ

  • মেকানিকাল লস বা যান্ত্রিক অপচয়
  • এক্সাইটারে পাওয়ার লস
  • আর্মেচার কোরে এডি কারেন্ট লস এবং হিসটারেসিস জনিত
  • লোড দেওয়ার জন্য পাওয়ার লস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Get 30% off your first purchase

X
error: Content is protected !!